আদালতে তোলার সময় ধৃত মানস রায় কে জুতো দেখালো বিজেপির মহিলারা

গনেশ চক্রবর্তী, দুর্গাপুর  : কর্মফল  ভোগ করতে হবে। এটাই নিয়ম।যেটা হবার ছিল এবং হলোও তাই।  আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলর ধৃত মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায়কে বুধবার পুলিশ দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাজির করে। ধৃতদের হাজির করার সময় বিজেপি কর্মীরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। মানস রায় চোর চোর বলে চিৎকার করে থাকেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। বিজেপির মহিলা কর্মীরা ছুতো দেখায় তৃণমূল কংগ্রেসের ৩২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায়কে । বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ,কটুক্তির আঁচ গায়ে না লাগতে দিয়ে শাসকদলের এই নেতা মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায়কে পুলিশ কর্ডন করে নির্বিঘ্নে আদালতে পৌঁছে দেয়। আর্থিক প্রতারণা মামলার জিজ্ঞাসা বাদ করার জন্য ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিতে  দুর্গাপুর থানার পুলিশ বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাজির করে। এদিন শুনানির পর আদালত ধৃতদের দুদিনের‌ পুলিশী হেফাজতের  নির্দেশ দেয় বলে জানা গেছে। এদিকে বুধবার প্রাক্তন কাউন্সিলর মানস রায় তার ছেলে অভ্রনীল রায়ের কুকীর্তি জানাজানি হতেই দুর্গাপুরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিজেপি বিধায়ক লক্ষন ঘডুই থেকে  পশ্চিম বর্ধমান জেলার কংগ্রেসের সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী মানস রায় ও তার ছেলেথ্য অভ্রনীল রায়কে ধরার পর ডিসিপি পূর্ব অভিষেক গুপ্তার বক্তব্য কে সরব হন।ডিসিপি অভিষেক গুপ্তা বলেছিলেন মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায়কে গ্রেপ্তার এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই ,এটা সম্পূর্ণ ক্রিমিনাল ম্যাটার। এই  মন্তব্য কে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসকে  বদনামের হাত থেকে বাঁচাতে  আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তা স্বয়ং আসরে নেমেছেন বলে বিরোধী দলের নেতারা সরব হয়েছেন। ডিসিপি অভিষেক গুপ্তার অবিলম্বে  পদত্যাগ দাবি করেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী এবং দুর্গাপুর পশ্চিম বিধান সভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষন ঘড়ুই। বিজেপি বিধায়ক লক্ষন ঘড়ুই বলেন এক মানস রায় শুধু ধরা পড়লো।মানস রায় একা চোর নয়। অনেক মানস রায় এখনো ধরা পড়েনি। দলের সব নেতাই দুর্নীতি বাজ। সাধারণ মানুষ কে চমকে ধমকে তোলা তুলছে । চোর ধরতে তৃণমূল কংগ্রেস দলটাই উজাড় হয়ে যাবে বলে অভিযোগ করেন লক্ষন ঘড়ুই।যদিও মানস রায় প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা কর্মীরা চুপ থাকায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে। এদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী  দুর্গাপুর নগর নিগমের ৩২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মানস রায়কে এদিন ‘বদ’ বলায় রাজনৈতিক মহলের ধারণা দুর্নীতি বাজদের সতর্ক করতেই  তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এদিন মানস রায়কে বদ বলেন। তিনি বলেন মানস টা খুব বদ।খারাপ কাজ করে বেড়াচ্ছে।তাই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।আইন আইনের পথে চলবে।নরেন বলেন দুর্নীতি করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাউকে রেয়াত করবেন না। উল্লেখ্য অনলাইনে একটি চারচাকা গাড়ি ৮,৪০,০০০ টাকার বিনিময়ে কেনাকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত পড়েন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায় বলে অভিযোগ।মেন গেটের বাসিন্দা গাড়ি বিক্রেতা মহম্মদ অসিফ কে ছয়টি চেক দেয় মানস রায়।সেই ছয়টি চেক ই বাউন্স করে যায় । বেশকিছু দিন অপেক্ষা করেও হাতে না টাকা পেয়ে মহম্মদ আসিফ প্রাক্তন কাউন্সিলর মানস রায়ের বাড়িতে যান। বাড়িতেও  নেই মানস বাবু বলে জানান তার স্ত্রী। মহম্মদ আসিফ বলেন বার বার‌ মানস বাবুর বাড়ি গিয়ে ও ঘুরে আসতে হয় আমাকে। প্রাপ্য টাকা না পেয়ে শেষমেশ দুর্গাপুর থানার শরনাপন্ন হন মহম্মদ অসিফ।এরপরেই দুর্গাপুর থানার পুলিশ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে মানস রায় ও তার ছেলে অভ্রনীল রায়কে প্রথমে আটক করে পরে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার তাদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দুজন কে নিজেদের হেফাজতে নেয় বলে জানা গেছে। মুখে কাপড় ঢাকা দিয়ে পুলিশ কর্ডন করে মান‌স রায়কে মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। দেখুন; সরাসরি সেই দৃশ্য

 

error: Content is protected !!