মঙ্গলবার,২৫ শে জুন ২০২৪
গনেশ চক্রবর্তী,নিউজ বাংলা ডিজিটাল : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বকুনি খেয়ে রাজ্য জুড়ে সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগী হলো রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন একদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় যেমন সরকারি জমি একে একে দখল হয়ে যাচ্ছে তেমনি রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় কাজ ভালো হচ্ছে না। মানুষ ট্যাক্স দিয়ে পরিষেবা কেমন পাচ্ছে সেটা দেখতে হবে সবার আগে।নোংরা আবর্জনায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। পুরসভা গুলি কি করছে! মুখ্যমন্ত্রী বলেন তাহলে আমাকে কি রাস্তায় নেমে ঝাঁট দিতে হবে এবার? মুখ্যমন্ত্রীর এই বকুনি যে সাময়িক হলেও কাজ হয়েছে তা বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নড়েচড়ে বসা দেখে বোঝাই যাচ্ছে। দুর্গাপুর নগর নিগমের সামনেই ভোট। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই বকুনি কতটা কার্যকর হচ্ছে তা এখন ই বোঝা যাচ্ছে না। সেটা নগর নিগমের তৎপরতা দেখে ভবিষ্যতে বোঝা যাবে। তবে দুর্গাপুর নগর নিগমের মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখার্জির দাবি দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় যথেষ্ট কাজ হয়েছে। তবে সরকারি জমি দখলের উচ্ছেদ করা বিষয়টি নগর নিগমের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না এটি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের বিষয়।আশা করি এডিডিএ এইবিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের নুতন চেয়ারম্যান কবি দত্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েই প্রথম দিন ই মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের নির্দেশ যে তিনি অক্ষরে অক্ষরে মানছেন তা প্রথম দিনেই উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে জলের মতো করে পরিষ্কার করে দিয়েছেন ।কবি দত্ত বলেছেন সরকারি জমি দখল কোনভাবেই তিনি মেনে নেবেন না।কোন কম্প্রোমাইজ নেই এই বিষয়ে। কোন প্রকার বাধা এলে প্রয়োজনে মুহূর্তের মধ্যে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়তে হলে তিনি তা ছেড়ে দেবেন। দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাক্তন সভাপতি হোটেল ব্যবসায়ী কবি দত্তের কথাও যা কাজ ও তা। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এডিডিএর জমির জবরদখল নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তথ্য পেতে আসানসোল ও দুর্গাপুরে দুটি পৃথক মোবাইল নম্বরে হেল্পলাইন নম্বর চালু করে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে এডিডিএ আধিকারিকদের ও জবরদখল বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া রাজনৈতিক আস্কারায় ২৪ নং ওয়ার্ডে একটি অবৈধ নির্মান বন্ধ করে দিয়েছেন । সিটি সেন্টার থেকে বিধান নগর গোটা এলাকায় পুলিশ এডিডিএ এই বিষয়ে যৌথ ভাবে কড়া নজরদারি শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে শাসকদলের নেতাদের মদতে জাতীয় সড়কের ধারে এবিএল এলাকায় গজিয়ে ওঠা একটি ধাবায় অভিযান চালায় পুলিশ। অবৈধ মদ বিক্রির দায়ে কয়েকজন কে আটক করা হয়। মঙ্গলবার আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের জমি পুনরুদ্ধার করতে সিটি সেন্টারের সরকারি জমি জবরদখল উচ্ছেদ নোটিশ পোষ্টারিং এবং মাইকিং ও করা হয়। জানা গেছে নুতন চেয়ারম্যান কবি দত্ত জবর দখল উচ্ছেদ নিয়ে এডি ডিএ র প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। কোনভাবেই যেন জবরদখল নিয়ে কোন কম্প্রোমাইজ করা না হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ পাবার পর জবরদখল উচ্ছেদ নিয়ে কাজ করতেও অনেকটাই সুবিধা হবে বলে স্বীকার করেছেন এডিডিএ চেয়ারম্যান।এডিডিএ এলাকায় গজিয়ে ওঠা জবরদখলদারদের মাত্র তিনদিন সময় দেওয়া হয়েছে এরমধ্যে সরকারি জমি দখলদাররা নিজে থেকে জিনিসপত্র নিয়ে সরে গেলে ভালো কথা নাহলে উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে এডিডিএর পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার এডিডিএর জবরদখল উচ্ছেদের এই নোটিশ সাটানো এবং মাইকিং নিয়ে সিটি সেন্টার এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শহরকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে এডিডিএ নুতন চেয়ারম্যান কবি দত্তের এই সাহসী পদক্ষেপ কে সাধুবাদ জানান দুর্গাপুরের সুশীল সমাজ। তবে এই পদক্ষেপ কতদিন কবি দত্ত চালাতে পারবেন সেই নিয়েও সংশয় রয়েছে আবার অনেকের। দুর্গাপুরের শ্রী ফেরাতে ,শহরকে মানুষের বাসযোগ্য সুন্দর করে গড়ে তুলতে হলে যে সবার আগে সরকারি জমি পুনরুদ্ধার ও ফুটপাত দখল মুক্ত করে রাস্তার সম্প্রসারণ প্রয়োজন সেকথা দেরিতে হলেও বুঝেছে সরকার সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না।