অবশেষে ডিজিটাল মিডিয়া সরকারি স্বীকৃতি পেলো।আমার দীর্ঘ ২৩ বছরের লড়াই এর জয় পেয়ে আমি আপ্লুত। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে আমি বিভিন্ন নামিদামি সংবাদ মাধ্যমে কাজ করলেও ডিজিটাল মিডিয়ার একজন কর্মী হিসেবে বেশি পরিচিত আমি।সেটাই গর্ব আমার।২৩ বছর আগে জেলার সম্ভবত প্রথম একমাত্র ডিজিটাল মিডিয়া বর্ধমান ডটকম দিয়ে ডিজিটাল মিডিয়ায় আমার কাজ শুরু হয়। ডিজিটাল মিডিয়া অবৈধ এই তকমা ঘোচাতে স্বীকৃতির লড়াই তখন থেকেই চলছে আমার।আমি দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করলেও বর্ধমান ডটকম এর কর্নধার শ্রদ্ধেয় প্রসেনজিৎ হাজরা জেলার স্তরে প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া বর্ধমান ডটকম শুরু করেন। তিনি ই আমাকে প্রথম ডিজিটাল মিডিয়ার কাজ করার সুযোগ দেন। তিনি ই হাতে কলমে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ শেখান আমাকে।এখনো শিখি তার কাছে।আমিই সম্ভবত প্রথম এই দুর্গাপুর থেকেই ডিজিটাল মিডিয়ার খবর সংগ্রহ করে তা বর্ধমান ডটকম কে আপলোড করি।ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকতা সেই শুরু আমার ।সেসময় কেও ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়ে বোধগম্য সেইভাবে ছিল না। ইন্টারনেট সম্পর্কে ও খুব কম মানুষই জানতো তার ব্যবহার। খুব কমসংখ্যক মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন।খবর পড়াতে নেট থেকে প্রিন্ট বের করে সংশ্লিষ্ট খবর পাঠককে পড়াতে হতো।সেই যুগ থেকে আজকের ডিজিটাল যুগ।তখন থেকেই আমি ডিজিটালের স্বীকৃতির লড়াই চালিয়ে। যাচ্ছি।সকলে সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি যথা সাধ্য।সেই যুগ আর এই যুগ বিস্তর ফারাক আজ হয়েছে।আজ ইন্টারনেট ছাড়া একপাও চলে না।জল বিদুৎ এর মতো আজ ইন্টারনেট নিত্যপ্রয়োজনীয়। তাই ডিজিটাল মিডিয়াও খবর সংগ্রহ এবং প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আজ অগ্রগন্য।সময়ের বিবর্তনে নির্বাচন কমিশন পশ্চিম বঙ্গের সমস্ত ডিজিটাল মিডিয়াকে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করার অনুমতি দিল। এটাই আমার কাছে সব থেকে সুখের খবর আজ।দীর্ঘ দিনের অবৈধ তকমা ঘুচিয়ে এবার ডিজিটাল মিডিয়া দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের নিউজ মিডিয়া কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সসম্মানে মাথা উঁচু করে মাঠে ময়দানে কাজ করতে অন্তত পারবে।ছাপোষা ব্যক্তিগত উদ্যোগের ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকরাদের সসম্মানে এই কাজ করার সম্মান টাই চাইছিল এতদিন ধরে।এরজন্য এতো লড়াই। দুর্গাপুর ই এই লড়াই এ প্রথম পথ ও শেষ পথ দেখিয়েছে।রাজ্যের প্রথম দুর্গাপুরেই ডিজিটাল মিডিয়া গুলিকে এক ছাতার তলায় এনে সরকারি স্বীকৃতির লড়াই শুরু হয়।এইজন্য বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের জন্ম হয়। বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের লড়াই এর ফল এই পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আজ রাজ্যের সমস্ত ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করার অনুমতি পেলো।এটা ডিজিটাল মিডিয়ার ঐতিহাসিক জয়। আমি ও এই বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের একজন সৈনিক। আমার বন্ধুবর বিশিষ্ট সাংবাদিক মনোজ কুমার সিংহ ও আমি এই সংগঠনের জন্ম দিই একরাশ স্বপ্ন নিয়ে। মনোজ সিংহ এর পরিকল্পিত লড়াই এবং তার নেতৃত্বে বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের সমস্ত সদস্যদের প্রচেষ্টায় আজ ডিজিটাল আজ সেই স্বপ্ন পূরন হলো।আজ এটাই মানসিক শান্তির কথা।দেশের পরবর্তী নির্বাচন গুলিতেও এবার আশাকরি ডিজিটাল মিডিয়া গুলি খবর সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে অক্লেশেই অনুমতি পাবে।ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল মিডিয়াই আজ প্রথম সারিতে রয়েছে।আর নির্বাচন কমিশন এই ডিজিটাল মিডিয়ারকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে রাজ্যের অগনিত ডিজিটাল মিডিয়া সাংবাদিকরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের খুঁটি নাটি খবর ও প্রকাশ করতে পারবে জনসমক্ষে।এর জন্য অবশ্যই স্যালুট নির্বাচন কমিশনকে। আমরা কৃতজ্ঞ।আর আরেক জনের নাম উল্লেখ না করলে অন্যায় হয় তিনি সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সম্প্রতি দলীয় কর্মসূচিতে তিনি দুর্গাপুরে এলে তাকে বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা কেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রসাশনিক সভায় অংশ গ্রহন করতে পারবে না বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া র সাংবাদিকরাসেই প্রশ্ন করা হয়।কেন ডিজিটাল মিডিয়াকে সরকার স্বীকৃতি দেবে না অথচ এই ডিজিটাল মিডিয়াই তো সারাক্ষন সরকারের খবর করে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের প্রচার করে।এটা আমাদের অধিকার। বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া এই দাবি রাখতেই সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বিষয় টি মুখ্যমন্ত্রী কে অবগত করবেন বলে জানান । সঙ্গে সঙ্গে তিনি বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা শাসক কে এই সংক্রান্ত একটি আবেদন পাঠানোর জন্য এবং মুখ্যমন্ত্রী কেও একটি আবেদন দিতে। এরপরেই বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা শাসক এস অরুন প্রসাদ কে। তারপর যা হবার তাই হলো। দীর্ঘ দিনের লড়াই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সমস্ত কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলো।এর কয়েকদিন পর ঐতিহাসিক চিঠি পায় বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশন। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশনের চিঠি পেয়ে। সরকার স্বীকৃতি দেয়।স্বীকৃতি চিঠি যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনেও। ডিজিটাল মিডিয়া কে সরকারের এই স্বীকৃতি খবরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ডিজিটাল মিডিয়া কর্মীদের মুখে হাসি ফুটেছে।ব্যক্তিগত উদ্যোগের এই ডিজিটাল মিডিয়া আজ কত সাংবাদিকদের রুজিরুটির এক বড় মাধ্যম ।লক ডাউনের পর কত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম কোম্পানি থেকে বিনা নোটিশে চাকরি চলে যায়।এই দুঃসময়ে একটা চাকরি পাওয়াও দুষ্কর।এই সময়ে এই ডিজিটাল মিডিয়ার নিউজ পোর্টাল খুলে কত সংবাদ মাধ্যম কর্মী মাথা উঁচু করে জীবনযাপন করছেন। পশ্চিম বঙ্গ সরকার ডিজিটাল মিডিয়া কে স্বীকৃতি দিয়ে এক সাহসি পদক্ষেপ দেখালো তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ডিজিটাল মিডিয়া কে স্বীকৃতি দিয়ে পশ্চিম বঙ্গ সরকার যে পথ দেখালো আগামী দিনে সারা দেশে ও এই স্বীকৃতি পথ দেখাবে বলে আমার বিশ্বাস। ডিজিটাল মিডিয়া কে এই যুগে কোনভাবেই আর আটকে রাখা যাবে না। বেঙ্গল ডিজিটাল মিডিয়া ফাউন্ডেশন এই জন্য ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানায় পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশন, পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও বিশেষ করে সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় কে।আমরা কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে। তাছাড়া পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা শাসক এস অরুন প্রসাদ, অতিরিক্ত জেলা শাসক পানিকার হরি শঙ্কর এবং দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক,জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ , দুর্গাপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ তাছাড়া ডিজিটাল মিডিয়াকে স্বীকৃতি দিতে যে সব প্রশাসনিক আধিকারিক সকলের অলক্ষ্যে থেকে ডিজিটাল মিডিয়ার স্বীকৃতি আদায়ে সাহায্য করেছেন তাদের প্রতি ও আমৃত্যু কৃতজ্ঞতা ও অনেক শ্রদ্ধা থাকবে ।