সোমবার ১৫ ই এপ্রিল ২০২৪
গনেশ চক্রবর্তী,নিউজ বাংলা ডিজিটাল : প্রবল গরম পড়তেই হঠাৎ করে দুর্গাপুরে পাগল কুকুরের উৎপাত শুরু হয়েছে। দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পথ চলতি মানুষকে কুকুরের কামড়ানোর খবর আসছে। জানা গত একসপ্তাহে মধ্যে ১৪ এবং ১৯ নং ওয়ার্ড পাশাপাশি এলাকায় পাঁচজন কে দুটি পৃথক পাগল কুকুর দিয়ে ঘায়েল করেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই দুর্গাপুর মহকুমা চিকিৎসা করিয়েছেন অনেক আবার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন বলে জানা গেছে।দিন দুয়েক আগে ১৪ নং ওয়ার্ডের বাঙ্গাল পাড়া এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী সূরজ রাই কুকুরের কামড়ে জখম হন। বর্তমান তিনি কুকুরের কামড় ক্ষত চিকিৎসা করিয়ে বর্তমানে ইনজেকশন নিচ্ছেন। তাছাড়া রবিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুর্গাপুর নগর নিগমের ১৯নং ওয়ার্ডের সুভাষ পল্লীর সুকান্ত সরনীতে পরপর চারজন কে গুরুতর ঘায়েল করে একটি পাগল কুকুর । দুজন পথচারী রাস্তা দিয়ে হেঁটে পেরোনোর সময় তাদের কামড় দেয় বলে জানা গেছে।তারমধ্যে একটি শিশু ও আছে বলে জানা গেছে। সুকান্ত সরনীতে নির্মাণ কাজে কর্মরত এক বিহারের বাসিন্দা রনজিৎ প্রসাদ কাজ সেরে ঘরে ফেরার সময় রাস্তায় তার উপর হামলা চালায় ঔ পাগল কুকুর টি বলে অভিযোগ। রনজিৎ প্রসাদের একটি পা গুরুতরভাবে জখম হয়। তাকে সোমবার সকালে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তার ও ইনজেকশন শুরু হয়। প্রশ্ন হচ্ছে গরম কাল। প্রবল গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এরমধ্যে পথচারীদের রাস্তায় পাগল কুকুরের আক্রমন হচ্ছে হঠাৎ হঠাৎ করে। দুর্গাপুর নগর নিগমের ভূমিকা কী। দুর্গাপুর নগর নিগমের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এহেন অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য নিরাপত্তা নিয়ে কি ভাবছেন মুখ্য প্রশাসক বা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা ! স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মন্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাখী তেওয়ারিকে ফোনে পাওয়া যায় নি।তাই দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখার্জি কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি পরিষ্কার জানান দুর্গাপুর পুরসভার অ্যানিমাল ডিপার্টমেন্ট নেই তাই আলাদা ভাবে পথের ভারসাম্যহীন কুকুরদের ধরতে কোন ডগ ক্যাচার নেই।কোন ফান্ড ও নেই।যদি কুকুরদের ধরতে হয় তবে স্থানীয় এনজিও দের দিয়ে সেইকাজ করাতে হবে আমাকে। সেটার খরচ আমাকে একদম ব্যক্তিগতভাবে ই করতে হবে।মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখার্জির এহেন কথায় অবাক হতে হয়। কলকাতা পুরসভার পর দুর্গাপুর নগর নিগমের নাম আসে পরিষেবার দিক দিয়ে। অথচ দুর্গাপুর নগর নিগমের অন্তর্গত পথচলতি বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় কোন ডগ ক্যাচার টিম নেই। পথ কুকুর গরুদের দেখভালের ও কোন ব্যবস্থা নেই।আর যেমন অ্যানিম্যাল ডিপার্টমেন্ট নেই তাই এই সংক্রান্ত কোন ফান্ড ও নেই। অথচ পথচলতি বহু মানুষ কে প্রতিদিন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। দুর্গাপুর নগর নিগমের কোন দায় দায়িত্ব নেই এই বিষয়ে ! একটু ভাবুন।দুর্গাপুর নগর নিগমের অন্তর্গত বিভিন্ন এলাকায় কোন ওয়ার্ডে যদি পাগল কুকুর কে দেখা যায় তবে তাকে ধরতে এনজিও দের খবর দিলে তারা পাগল কুকুরকে কব্জা করতে ঘুম পাড়ানি ইনজেকশন থেকে কুকুর কে ধরে নিয়ে যাবার সমস্ত খরচ চাইছেন বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। কেন এইসব খরচ চাইছেন তাদের প্রশ্ন করলে এনজিও কর্মীদের কেউ কেউ জানান আমাদের নিজস্ব সেরকম সেল্টার এই মুহূর্তে নেই। সেইরকম আর্থিক সঙ্গতিও নেই আমাদের ।আমরা কুকুর ভালোবাসি।ডগ লাভার। রাস্তায় কুকুর প্রতিপালন করি।পাগল কুকুর ধরা থেকে পানাগড় সেল্টার পর্যন্ত নিয়ে যেতে তাই যা খরচ হয় সেই খরচ দিতে হবে আমাদের।সেটা কিভাবে দেবো আমরা বলুন! পাল্টা প্রশ্ন করছেন তারা।কোন কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা জানান আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নিজস্ব অ্যানিম্যাল সেল্টার আছে। তবে সেই সেল্টার সবে তৈরি করা হচ্ছে।এখনো কুকুর রাখার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করতে সময় লাগবে। কুকুর ধরে নিয়ে গিয়ে এই মুহূর্তে আমরা কুকুর টির প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারবো আমরা। তবে কুকুর ধরার খাঁচা নেই। বন দফতরের খাঁচা আছে তারা প্রয়োজনীয় সময়ে খাঁচা দেয়না আমাদের। বহু প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা দুর্গাপুরে সেবামূলক কাজ করছি।আমরা যদি একটু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ সহযোগিতা বিভিন্ন মহল থেকে পেতাম তো অবলীলায় তাই এই সব কাজ করতে পারতাম। সোমবার দুর্গাপুরের এক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মুখ্য কর্ত্রী কেয়া দুয়ারী দিন্দা একসহ কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে দুর্গাপুর নগর নিগমের মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখার্জির নির্দেশে শেষমেশ বেনাচিতির সুকান্ত সরনীতে ঘটনাস্থলে আসেন কুকুর টিকে ধরতে। কিন্তু ঔ পাগল কুকুর টিকে সেইসময় ঘটনাস্থলের আশপাশে খুঁজে না পাওয়ায় কুকুর টিকে ধরতে পারেনি ঔ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা বলে জানা গেছে। কুকুর টিকে এলাকায় দেখা গেলে ফের তাদের খবর দিতে বলেন তারা। পাগল কুকুর টিও নিখোঁজ এই মুহূর্তে তাই স্থানীয় মানুষ পাগল কুকুরটির ভয়ে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।