মঙ্গলবার,২৬শে ডিসেম্বর ২০২৩
গনেশ চক্রবর্তী, নিউজ বাংলা ডিজিটাল : দুর্গাপুরের অঙ্গদপুর শিল্প তালুকের কাজোরিয়া কারখানায় রবিবার দুপুরে কর্মরত অবস্থায় এক শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরের শ্রমিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।মৃত শ্রমিকের নাম বরুন মশান,বয়স চল্লিশ বছর। রবিবার দুপুরে কর্মরত অবস্থায় হঠাৎ তার রহস্যজনক ভাবে ঝলসে মৃত্যু হয় কারখানার মধ্যে। পরিবারের অভিযোগ রাতুড়িয়া অঙ্গদপুর শিল্প তালুকে কাজোড়িয়া আইরন কাস্টিং কারখানা এবং ঢিল ছোড়া দুরত্বে এই কারখানার শ্রমিক বরুনের বাড়ি হলেও বরুনের পরিবারকে দুর্ঘটনার কোন খবর দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।এটাই রহস্যজনক বলে দাবি শ্রমিক মহল ও বরুনের পরিবারের ।জানা গেছে দুর্গাপুরের কোক ওভেন থানার পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃত বরুনের স্ত্রী, বছর ষেলোর এক মেয়ে এবং আট বছরের ছেলে রয়েছে। প্রথমে দাবি না মানলেও বরুনের পরিবার পরিজন সহ সহকর্মীদের দাবি মেনে কারখানা কর্তৃপক্ষ শেষমেষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের একজন কে একটি চাকরি দেবার দাবি মেনে নেয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। কারখানার শ্রমিকদের দাবি বরুন মশান কাজ করার সময় এই রহস্যজনক মৃত্যুর পিছনে কারখানার শ্রম আইন বাস্তবে কার্যকরন এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক গলদের কারনেই দুর্গাপুর শিল্প তালুকে বার বরুনের মতো শ্রমিকদের মৃত্যু ঘটছে। বিশেষ করে কারোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সময় লক ডাউনের সময় থেকে কলকারখানা গুলিতে লোকসানের অজুহাতে এক শ্রেনীর মালিক পক্ষ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ভয় দেখিয়ে ব্যাপক মুনাফা করছে বলে শ্রমিক মহলের দাবি। অপরদিকে সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে শিল্প বাণিজ্য যাতে ঠিক থাকে এবং শ্রমিক ছাঁটাই ও না হয় তাই উভয়ের ভারসাম্য রক্ষায় শিল্পনগরী দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসন ও কার্যত সব দেখে চুপ থাকতে ভাত ঘুম দিয়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিক মহলের। এই ক্ষেত্রে দুর্গাপুরের রাজনৈতিক ভাবে বিশেষ করে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের সব স্তরের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এবং বেসরকারি কারখানায় এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতার মালিকদের তোষন কেও কেউ কেউ দায়ী করছেন।বার বার শ্রমিক দুর্ঘটনা ঘটলেও শিল্পনগরী দুর্গাপুরের বেসরকারি কারখানায় শ্রমিক নিরাপত্তার গলদ দেখতে আর কোন বিশেষ অভিযান কার্যত আগের মতো হয়না।দূষন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও অজ্ঞাত কারণে একদম চুপচাপ।তাই দুর্গাপুরে সন্ধ্যা নামতেই শিল্প তালুক কার্যত ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায় বলে দাবি শ্রমিকদের।সব মিলিয়ে সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কার্যত উদাসীনতায় একদিকে যেমন বেসরকারি কারখানা গুলি দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে লোকসানের নাম করে মুনাফা লুটছে তেমনি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কঠোর পরিশ্রম করেও শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে বেসরকারি কলকারখানার শ্রমিকরা চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে এবং বরুনের মতো তরতাজা প্রান অকালে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে বলে দাবি শ্রমিকদের। দুর্গাপুরের বেসরকারি কারখানার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বার বার শ্রমিক মৃত্যু ঘটছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানাতেও । শ্রমিকদের দাবি শ্রমিক শোষণ এবং এই শ্রমিক মৃত্যু মিছিল যাতে বন্ধ হয় শিল্পাঞ্চলে প্রশাসনকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে নচেৎ দুর্গাপুরে আমরা সংগঠিত হয়ে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াবো।