গনেশ চক্রবর্তী দুর্গাপুর : একদিকে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ দুর্গাপুর শহরের উন্নয়ন কে হাতিয়ার করে শহরের প্রান কেন্দ্রে সিটি সেন্টারে একের পর এক প্রবীণ গাছ কেটে চলেছে। রাস্তা চওড়া করার নামে অবলীলায় সবুজ ধ্বংস করে চলেছে। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান প্রভাবশালী কবি দত্তের নেতৃত্বে শহরের বুকে একের পর এক সবুজ ধ্বংস প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন। তখন ক্ষতে প্রলেপ দিতে অপরদিকে কবি দত্তের ব্যাবসায়ী বন্ধুরা ব্যবসায়ী স্বার্থে, ঢাকঢোল পিটিয়ে ২৫ শে জানুয়ারি দুর্গাপুরের বুকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সবুজ বাঁচাতে বিগ ইভেন্ট ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা রান ফর এনভায়রনমেন্ট করতে চলেছে। শুক্রবার দুর্গাপুরের বিধান নগরের ডিএস এম এস ম্যানেজমেন্ট কলেজের কর্ণধার শিউলি মুখার্জির নেতৃত্বে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা ঘোষণা করা হয়। যদিও দুর্গাপুরকে দূষণ মুক্ত শহর গড়তে শিউলী মুখার্জিদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানান দুর্গাপুরের সবুজ বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীরা। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন বিগ বাজেটের বিগ ইভেন্ট রান ফর এনভায়রনমেন্ট ও অনুষ্ঠিত করা নিয়েও।আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত অবশ্য জানান সিটি সেন্টারের রিকল পার্কের সামনে রাস্তায় প্রবীণ গাছ গুলি কাটার ব্যাপারে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বন বিভাগের অনুমতি নিয়েই ফোর লেন রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রবীণ গাছ গুলি কাটতে অগ্রসর হয়েছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পরিবর্তে সবুজ বাঁচাতে চারশত গাছ লাগানো হয়েছে দুর্গাপুর শহরের বুকে দাবি কবি দত্তের।এডিডিএর চেয়ারম্যান কবি দত্তের এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দুর্গাপুরের পরিবেশ প্রেমীরা। বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।বিধান নগরের মৃত্তিকা সংগঠনের কর্মী ,পরিবেশ প্রেমী সবুজ বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী কৌশিকী ঘটক এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন এই সব মিথ্যা কথা বলছেন এডিডিএর চেয়ারম্যান কবি দত্ত। কৌশিকী ঘটক বলেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদে বসে সরকারি পদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এডিডিএর চেয়ারম্যান।কৌশিকী ঘটক সারা দেশের দূষনের পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন দুর্গাপুর শহর এই মুহূর্তে দূষণে দিল্লী কেও ছাড়িয়ে গেছে।আর সরকারি ক্ষমতা কে কাজে লাগিয়ে এডিডিএর চেয়ারম্যান কবি দত্ত সবুজ ধ্বংস করছেন। বিজেপি নেতা অমিতাভ ব্যানার্জী ও সিটি সেন্টারের প্রবীণ গাছ গুলি কাটার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেন। আন্দোলনের হুমকি দেন। দুর্গাপুরের সুশীল সমাজ ও সবুজ ধ্বংসের খবর শুনে নিন্দায় সরব হয়। প্রশ্ন এখানেই উঠেছে দুর্গাপুরের পরিবেশ প্রেমীরা যখন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের রিকল পার্কের সামনের রাস্তা চওড়া নিয়ে সরব হলেন তখন কোথায় ছিলেন এই রান ফর এনভায়রনমেন্ট বিগ ইভেন্টের আয়োজক হুজুগে পরিবেশ প্রেমীরা। যদি পরিবেশ দূষণ নিয়ে এতোই চিন্তিত পরিবেশ প্রেমী শিউলি মুখার্জিরা তাহলে ব্যাবসায়ী বন্ধু কবি দত্তকে সবুজ ধ্বংসের বিরুদ্ধে সেইদিন কেন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেননি সেই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন দুর্গাপুরের পরিবেশ প্রেমী মানুষেরা। ব্যবসায়ী স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতেই কি লোক দেখানির রান ফর এনভায়রনমেন্ট এর উদ্যোগ আয়োজকদের ! যাতে সাপ ও মরে আর লাঠিও না ভাঙ্গে।পরিবেশ প্রেমীরা আরো প্রশ্ন তোলেন যেখানে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের দূষন দিল্লীকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে সেইসময় উন্নয়ন কে হাতিয়ার করে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছেন বলেই কি অবলীলায় প্রবীণ গাছ গুলি কেটে ফেলতে পারেন ! ব্যবসায়ী স্বার্থে সরকারি শীল মোহরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যথেচ্ছ ভাবে সবুজ ধ্বংস করতে পারেন প্রভাশালী হোটেল ব্যবসায়ী কবি দত্ত রা। আর যেখানে পরিবেশ দূষণে জেরবার দুর্গাপুর। দুর্গাপুরের ঘরে ঘরে শ্বাসকষ্ট জনিত নানা সমস্যা ,দুরারোগ্য ব্যাধি বাসা বেঁধেছে সেখানে বন বিভাগ ও কোন বিচারের মাপকাঠিতে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদকে যথেচ্ছ ভাবে সবুজ ধ্বংসের অনুমতি দিলো সেই বিষয় টিও তদন্ত সাপেক্ষে বলেই পরিবেশ প্রেমীরা মনে করছেন। দুর্গাপুর উৎসবের খুঁটি পূজোর দিন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পরিবেশ দূষণ নিয়ে হুঙ্কার দেন ।চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপর এই বিষয়ে নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী যদিও মুখ খোলেন নি আর । দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক ভাত ঘুম দিয়েছেন। দুর্গাপুর নগর নিগম ও তথৈবচ। পরিবেশ রক্ষায় লোক দেখানি বৃক্ষ রোপন ছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধে কোন সদর্থক ভূমিকা নিতে দুর্গাপুরের কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে সেভাবে দেখা যায় নি । যাদের সব থেকে বড় ভূমিকা নেবার কথা সেই দুর্গাপুরের দূষণ পর্ষদের কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতায় তিতিবিরক্ত শিল্পাঞ্চলের ভুক্তভোগীরা । শেষমেশ সব দেখে শুনে হতাশ দুর্গাপুরের ভুক্তভোগীরা তেমনি পরিবেশ প্রেমীরাও।বাধ্য হয়ে দুর্গাপুরকে এখন দূষনের কবল থেকে বাঁচতে, দুর্গাপুরের সবুজ ধ্বংস বন্ধ করতে পরিবেশ প্রেমীরা যেমন ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল দ্বারস্থ হবার উদ্যোগ নিচ্ছেন তেমনি অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নালিশ জানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।